আজকে আমরা এক জাতির গল্প শুনবো, যারা ছিল আর্কিটেক্ট, স্থাপত্যবিদ। তাদের স্থাপত্যশৈলীর কলাকৌশল আজও মানুষকে অবাক করে দেয়। তারা পাহাড়ের পাথর কেটে বাড়ি বানাতে পারতো, এ এমন এক বাড়ি, ভূমিকম্পে যার কোন ক্ষতি হবে না, বাতাস এর কিছুই করতে পারবে না। না হারিকেন, না টর্নেডো। তারা ভাবতো, তারা নিরাপদ, একেবারে নিরাপদ।
তাদের কাছে পাঠানো হল, তাদেরই হাতে বড় হওয়া এক যুবক, সায়্যিদিনা সালেহ আ.। তারা আশা করত, এই যুবক তাদের নেতৃত্ব দেবে। কিন্তু সালেহ আ. তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন, বললেন,
“..হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই..”
এ কথা শুনে তারা বিরক্ত হল, তারা বললঃ
”হে সালিহ্! তুমি তো আমাদের কাছে এর আগে ছিলে আশা-ভরসার পাত্র, তুমি কি আমাদের পিতৃপুরুষরা যাদের উপাসনা করত তাদের উপাসনা করতে আমাদের নিষেধ করছ? কিন্তু যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচ্ছ আমাদের তাতে এমন সন্দেহ রয়েছে যে, মন মোটেই সায় দিচ্ছে না”। [সূরা হুদ ১১ : ৬২]
সুবহানআল্লাহ! এটা মানুষের এক ধরনের অন্তরের ব্যাধি যে তারা তাদের বাপ দাদার উপাস্যদের পরিত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে না। পৃথিবীর বুকে উন্নত জাতির দিকে তাকান, জাপান কিংবা আমেরিকা। লক্ষ্য করুন তাদের জীবনযাত্রার মানের দিকে, তাদের কথাবার্তা, চালচলন এবং চিন্তাভাবনার দিকে লক্ষ্য করুন। গণিতের প্রফেসর, ফিজিক্সের ডক্টরেট, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ – কি নেই তাদের! কিন্তু, আফসোস! তারা গণিত বোঝে, ইঞ্জিনিয়ারিং বোঝে, ইতিহাস আর সমাজ বোঝে, অথচ ধর্ম বোঝে না!
এই গণিতে পিএইচডি করা লোকটি যিনি কিনা দুনিয়ার সব থেকে আধুনিক ল্যাবে কাজ করেছেন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত, কাজ করছেন বিবিধ জটিল সংখ্যা এবং যুক্তি নিয়ে; কিন্ত তিনি যখন সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আসছেন, তখন তিনি অবলীলায় মাটির মূর্তির সামনে মাথা নত করছেন অথবা গরুপূজো করছেন!
জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত, প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ সামূদ জাতি, যারা ভাবত সকল বিপদ-আপদ থেকে তাদের আছে নিশ্চিন্ত-নিশ্ছিদ্র নিরাপদ ব্যবস্থা, তারা কি যুবক সালেহ আ. এর আহবানে সাড়া দিয়েছিল? কি হয়েছিল তাদের?